কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবারের মত আয়োজিত হতে যাচ্ছে সমাবর্তন। এ মাসের ২৭ তারিখ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে। তাই ক্যাম্পাসকে জাঁকজমকপূর্ণ ও দৃষ্টিনন্দন করতে প্রশাসন বিভিন্ন উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। প্রথম সমাবর্তন যেন দৃষ্টিনন্দন হয় তাই ক্যাম্পাসকে সাজানোর বিভিন্ন চেষ্টা করছে প্রশাসন যা প্রশংসা করার মতো।
সরেজমিনে জানা যায়, ক্যাম্পাসের একমাত্র গোল চত্বরটিতে ধারাবাহিকভাবে কয়েক স্তরে শীতকালীন ফুলের বাগান তৈরি করা হয়েছে, যা সমাবর্তনে আগত শিক্ষার্থীদের দারুন ভাবে আকৃষ্ট করবে। এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে তৈরী হওয়া মুক্ত মঞ্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে এবং যা ইতোমধ্যেই শিক্ষার্থীদের নানা অনুষ্ঠান, সাংস্কৃতিক চর্চা ও মুক্ত প্রতিভার বিকাশ করার অন্যতম স্থান হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্যের সভাপতি রিজওয়ান কবীর বলেন, “প্রথমবারের মত সমাবর্তন উপলক্ষে ক্যাম্পাসে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ চলছে যা আমরা সবাই দেখতে পাচ্ছি। ক্যাম্পাসকে সুন্দর ও দৃষ্টিনন্দন করতে প্রশাসন যেসব পরিকল্পনা করেছে আশা করি এটা সুন্দর একটি ভিউ তৈরি করবে। প্রশাসনের এসব উদ্যোগের সাধুবাদ জানাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বর্ধন কমিটির আহবায়ক ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সোহরাব উদ্দীন বলেন, “কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাকৃতিক পাহাড়ি পরিবেশে গড়ে উঠা একটি অনিন্দ্য সুন্দর বিশ্ববিদ্যালয়। তাই প্রাকৃতিক এই পরিবেশেকে প্রাধান্য দিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়কে সাজানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সমাবর্তনকে সামনে রেখে প্রাথমিক অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মুখ অংশে যে ভূমিরূপ আছে তার সৌন্দর্য বর্ধনের নানা পদক্ষেপ হাতে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রশাসনিক ভবনের সামনের অংশে অবস্থিত নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত টিলাটিকে সংস্কার করে একটি সবুজ পাহাড়ে পরিণত করার জন্য ঘাস লাগিয়ে পরিচর্যা করা হচ্ছে। পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে তৈরী করা ডাবল লেন রাস্তার আইল্যান্ডে নানা জাতের ফুল দিয়ে সবুজ বেষ্টনীর মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “ ক্যাম্পাসের সমস্ত রাস্তার পাড় ধরে পরিকল্পিত বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। ক্যাফেটেরিয়া পর্যন্ত একপাশে সোনালু ও আরেক পাশে জারুল ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে, যা ভবিষ্যতে এক পাশে বেগুনী ও আরেকপাশে হলুদ ফুলের সমারোহ তৈরি করবে। এছাড়াও ক্যাফেটেরিয়া থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত রাস্তার দুইপাশে লাগানো হয়েছে কৃষ্ণচূড়া।”
“সামগ্রিকভাবে সমাবর্তনকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে এমনভাবে সাজানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে যেন সমাবর্তনে আগত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন রূপে, বর্নিল সাজে উৎসব মুখরতায় ঊপভোগ করতে পারে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও সমাবর্তনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোঃ আবু তাহের বলেন, সমাবর্তন উপলক্ষ্যে ক্যাম্পাসে সৌন্দর্য বর্ধনের বিভিন্ন কাজ করা হয়েছে, এখনো কিছু কাজ চলছে। ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করছে সৌন্দর্য বর্ধন কমিটি। সমাবর্তনের সময় যতই এগিয়ে আসবে ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করবে। সমাবর্তনে সবাইকে একটি প্রাকৃতিক দৃষ্টিনন্দন ক্যাম্পাস উপহার দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।